আপরাধ মালা ডেস্ক : যুক্তরাজ্যে নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। নতুন সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পরই সেই দেশের আভ্যন্তরীণ নীতি, পররাষ্ট্রনীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে সরকার। স্টারমার সরকার অভিবাসী নীতির বিপক্ষে নয়। তবে অভিবাসীদের কিছু সীমারেখার মধ্যে আবদ্ধ থাকা উচিত বলে তারা মনে করছেন। স্টারমার সরকার মনে করছে যে, অভিবাসীরা যুক্তরাজ্যে অবস্থান করে যা খুশি তা করলে যেমন পররাষ্ট্রনীতির ওপর তার প্রভাব পড়ছে, অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের স্থিতিশীলতা এবং ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এ কারণেই লেবার সরকার তার প্রথম দিকে যে সমস্ত নীতি এবং উদ্যোগগুলো গ্রহণ করতে যাচ্ছে, তার মধ্যে একটি হল অভিবাসীদের কার্যক্রম সীমিতকরণ।
অভিবাসীদের মধ্যে দুটো ভাগ রয়েছে। প্রথমত, যারা অবৈধভাবে সেখানে অবস্থান করছেন। তাদেরকে বৈধকরণের ক্ষেত্রে একটি রুপরেখা প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নতুন লেবার সরকার। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে তাদের একটি বড় অংশই বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবে। অন্যদিকে যারা অবৈধ অবস্থায় থাকার পর রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেছে নানা কারণে তাদেরকেও একটি গণ্ডির মধ্যে রাখার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা তৈরি করা হচ্ছে। আগামী ১০০ দিনের মধ্যে এই নীতিমালা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানা গেছে। আর এই নীতিমালার প্রধান যে বিষয়টির কথা বলা হয়েছে যে, মানবিক কারণে বা রাজনৈতিক কারণে যারা যুক্তরাজ্যে আশ্রয় লাভ করবেন তাদেরকে একটি সীমিত পরিসরে কাজ করতে হবে। এই সীমিত পরিসরের মধ্যে রয়েছে তারা যুক্তরাজ্য সরকারের আইন নিয়ম কানুন মেনে চলবেন। তারা অবৈধ পথে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন না এবং বিদেশ থেকে তাদের কোনো অর্থ আসলে সে ব্যাপারে সরকারকে অবহিত করতে হবে এবং সেই অর্থের উৎস জানাতে হবে। পাশাপাশি সেই অর্থের উচ্চ কর দিতে হবে। পাশাপাশি এটিও নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে, রাজনৈতিক আশ্রয়প্রাপ্ত অভিবাসীরা কোনও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেদেরকে যুক্ত করতে পারবেন না।
বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। লন্ডনে বসে তিনি বিএনপির দল চালাচ্ছেন। কিন্তু লেবার পার্টির এই নতুন অভিবাসন নীতি বাস্তবায়িত হলে তাকে বিএনপির পদ ছাড়তে হবে। বিএনপির কোনো পথ দখল করে তিনি যুক্তরাজ্যে বসবাস করতে পারবেন না। দ্বিতীয়ত, তার আয় ব্যয়ের নিয়মিত হিসাব দিতে হবে এবং রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা ব্যক্তি হিসেবে তাকে বলতে হবে। কোথা থেকে কোন খাতে তিনি কত টাকা পেয়েছেন তার বিস্তারিত হিসাব দেখাতে হবে।
তৃতীয়ত, তারেক যে সমস্ত সম্পদ বৈধ পন্থায় যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাবেন, সেই সমস্ত সম্পদের ওপর তাকে উচ্চ শুল্ক দিতে হবে। উল্লেখ্য যে, লেবার পার্টির একাধিক এমপি বলেছেন যে, রাজনৈতিক আশ্রয় লাভকারী ব্যক্তিরা এখানে দুর্নীতির অর্থে অর্জিত টাকা দিয়ে রাজকীয় জীবনযাপন করতে পারেন না। এতে ব্রিটিশ সমাজের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। শুধু তারেক জিয়া নয়, বেশকিছু পলাতক অভিবাসী যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেছেন। তারা অবৈধ অর্থ দিয়ে রাজকীয় জীবন যাপন করছেন। এটি যুক্তরাজ্য সমাজে একটি বিরূপ প্রভাব তৈরি করেছে। আর এ কারণেই এ সব বন্ধের উদ্যোগ গ্রহণ করছে নতুন লেবার সরকার। লেবার সরকার মনে করছে যে, যারা রাজনৈতিক আশ্রয় লাভ করেছে তারা মানবিক কারণে পেয়েছে এবং তাদের সে রকম জীবন যাপন করা উচিত। কিন্তু মানবিক কারণে আশ্রয় পাওয়া ব্যক্তিরা যখন রাজকীয় জীবন যাপন করে তখন তা দৃষ্টিকুটু এবং অন্যায্য বটে। আর এ কারণে তারা এটা বন্ধের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এটি বাস্তবায়িত হলে তারেক জিয়ার বর্তমান অবস্থায় লন্ডনে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে। হয় তাকে রাজনীতি ছাড়তে হবে অথবা যুক্তরাজ্য ছাড়তে হবে।