অনলাইন ডেস্ক: প্রথমবারের মতো ব্রাজিলের মূল একাদশে জায়গা পেয়েছিলেন এন্ড্রিক ফেলিপে, যাকে বলা হচ্ছে সেলেসাওদের ভবিষ্যৎ। তবে প্রথমবার জাতীয় দলের হয়ে কোপা আমেরিকার মতো বড় মঞ্চে পুরো ম্যাচ খেলা তার জন্য বড় সুযোগ ছিল। যদিও তার ‘ফ্লপ’ থাকার দিনে টাইব্রেকারে হেরে বিদায় নিয়েছে ব্রাজিল। যা নিয়ে নিজের তিক্ত অনুভূতি জানিয়েছেন এন্ড্রিক। অন্যদিকে, ব্রাজিল অধিনায়ক দানিলো-ও কঠিন সময়ে সমর্থকদের পাশে চেয়েছেন।
লাস ভেগাসে ব্রাজিল-উরুগুয়ে ম্যাচের পুরো ৯০ মিনিটে কোনো গোল হয়নি। ফলে খেলা টাইব্রেকারে গড়ালে চূড়ান্ত ‘আপসেট’ দেখে ব্রাজিলিয়ানরা। অথচ মূল ম্যাচের আরও ১৬ মিনিট বাকি থাকতেই দরিভাল জুনিয়রের শিষ্যরা বড় সুযোগ পেয়েছিলেন। এক মিডফিল্ডারের লাল কার্ডে উরুগুয়ে ১০ জনের দলে পরিণত হয়ে পড়েছিল, কিন্তু সেই সুযোগটি নিতে পারেননি রদ্রিগো-দানিলোরা। পরবর্তীতে টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে জিতে সেমিতে উঠে যায় উরুগুয়ে।
এমন হারের পর নিজের হতাশা লুকাননি ১৭ বছর বয়সী তরুণ স্ট্রাইকার এন্ড্রিক। ক্লাব মৌসুমের শুরুতে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিতে যাওয়া এই তারকা বলেন, ‘আমি দুঃখিত, শুধু আমরাই নই, পুরো ব্রাজিলিয়ান গোষ্ঠীর মনের অবস্থা বুঝতে পারছি। এভাবে বিদায় মেনে নেওয়া কঠিন, তাও আবার পেনাল্টি শ্যুট আউটে। কঠিন হলেও আমরা মাথা উঁচু রাখতে চাই, কারণ আমরা ব্রাজিলকে আবারও তাদের শীর্ষস্থানে নিয়ে যেতে চাই। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটি এখানে হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাব, প্রস্তুতি শুরু করবে পরবর্তী বিশ্বকাপকে সামনে রেখে এবং আশা করি এই সময়ে ব্রাজিলিয়ানদের সমর্থন আমাদের পাশে থাকবে। আমরা জানি তাদের জন্য-ও বিষয়টা কঠিন, কিন্তু তাদের সমর্থনই আমাদের এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। প্রথমবার শুরুর একাদশে খেলার সুযোগ পেয়ে আমি সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ জানাই।’
কোপা থেকে বিদায়ের পর নিজেদের দুর্বলতার কথা স্বীকার করেছেন ব্রাজিলের অধিনায়ক দানিলো। এই রাইটব্যাক বলেন, ‘সম্ভবত আমরা যেসব সুযোগ পেয়েছি, তার কোনোটাই কাজে লাগাতে পারিনি। এক বা দুটি ক্লিয়ার চান্সকে গোলে পরিণত করা যায়নি। তবে এটি বলাটা কঠিন, কারণ আমরা নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করেছি, লড়েছি শেষ পর্যন্ত। এরপর পেনাল্টি হলো, যেখানে কোনো লটারি জিতিনি।’
ব্রাজিলের এমন কঠিন দশা চলছে গত কাতার বিশ্বকাপের সময় থেকেই। এরপর ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে তাদের পারফরম্যান্স ছিল চরম হতাশার। দরিভাল দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সেই দলটিকে গুছিয়ে আনার প্রক্রিয়া চালাচ্ছেন, কিন্তু কিছু দুর্বলতা এবারের কোপায়ও বড় আকারে টের পাওয়া গেছে। তবে তরুণ দলটির ওপর ধৈর্য্য ধরে আস্থা রাখার আহবান জানিয়েছেন অধিনায়ক দানিলো। তিনি বলেন, ‘এই তরুণরা কী করতে পারে সেটি দেখিয়েছে। আমি এখন ধৈর্য্য আশা করি, এটাও জানি ব্রাজিল দীর্ঘদিন কিছু জিততে পারেনি। কিন্তু এই দলটার ওপর আস্থা রাখতে হবে। আমি নিজের কথা বলছি না, কারণ আমি কতদিন খেলব নিজেও জানি না। এটাও জানি না যে (জাতীয় দলে) আর সুযোগ পাব কি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই দলের সঙ্গে খেলতে পারা আমার জন্য অনেক সম্মানের। ওরা কঠোর পরিশ্রম করে, খুবই পেশাদার এবং সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করে। এখানে অনেক চাপ আছে, কিন্তু সেটি ধৈর্য্য নিয়ে মোকাবিলা করা প্রয়োজন। কারণ এসব তরুণ– এন্ড্রিক, স্যাভিও তাদের যে যোগ্যতা আছে, সেটি কাজে লাগাতে এখন সমর্থন প্রয়োজন।’